Select Page

চাকরির পরীক্ষার যন্ত্রণার নাম Vocabulary. সবার মত আমার কাছেও Vocabulary বিভীষিকা। প্রথম যখন চাকরির পরীক্ষার আগের বছরের প্রশ্ন দেখলাম, মনে হল – সব কিছুই আয়ত্ত্বে চলে আসবে একটু সময় দিলে; কিন্তু ভোকাবিউলারি? হায় – এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে! কিন্তু নানান মাইকাচিপায় পড়ে আমাকে অনেক Vocabulary পড়তেই হয়েছিল। শুধু পড়া না, পড়াইতেও হইছিল। তো এখন দেখি, আমি যেভাবে Vocabulary শিখতে এবং মনে রাখতে চেষ্টা করতাম, সেগুলোর কিছু টিপস আর টিউটোরিয়াল:

GRE দেবার সময় আমাকে সিস্টেমেটিক্যালি Vocabulary পড়তে হয়েছিল, খাতায় গ্রুপ করে শব্দ লিখে আবার মনে রাখার ক্লু লিখে লিখে পড়েছিলাম। তো বিসিএস এর রেজাল্টের পর আমার কিছু প্রিয় ছোট ভাই-বোন (এখন অনেকেই বিসিএস ক্যাডার) পরামর্শ নিতে আসত, ওদেরকে বাচ্চাদের মত Vocabulary বলতাম, মানে সামনে শিট রেখে মনে রাখার ক্লু আলাপ করতাম। ওদের মধ্যে কোন এক প্রিয় স্মার্ট আমার সেই কথাগুলা রেকর্ড করেছিল (আমি জানতাম না এই রেকর্ডের কথা)। তো কিছুদিন আগে এক প্রকাশক আমার সাথে দেখা করে বললেন যে, ওই রেকর্ডের ২/১ টা উনি পেয়েছেন। ওনার নাকি ভোকাবিউলারি শিখার কৌশলটা ভীষণ পছন্দ হয়েছে। এখন উনি ভালভাবে রেকর্ড করে সিডি আর বই বের করবেন। আর তাতে আমার পকেটও যথেষ্ট ভারী হয়ে যাবে। বললাম, ‘ভাইরে, গাইড বই বের করার জন্য চার বছর ধরে অনেকেই সোনার হরিণ হাতে দিতে অনেক চেষ্টা করছে। বিষয়টা আমার সাথে যায় না।’ কিন্তু উনি ছাড়বেন না, বাসা পর্যন্ত ধাওয়া শুরু করলেন। ওনাকে ভাগিয়ে দিবার জন্য আমি বললাম, ‘দেখুন, গাইড আমি বের করব না। সামনের বই মেলায় অব্যয় অনিন্দ্য নামে একটা কবিতার বই আর একটা গল্পের বই বের করার কথা ভাবছি। আপনি বরং এগুলো প্রকাশ করে দিন।’ ওমা, উনি পাণ্ডুলিপি না দেখেই সানন্দে রাজি, বললেন, ‘ঠিক আছে, তাইলে ভোকাবিউলারির সিডি আর বই ১ মাসের মধ্যে বের হবে আর সাহিত্যের বই বইমেলায়।’ উনি অনেক কিছু বললেন, এই ভোকাবিউলারি বই দিয়ে মানুষ আমাকে জানবে আর আমার কবিতা, গল্পের বই হু হু করে বিক্রি হবে… এমন কত কিছু!! তখন একেবারে করজোড়ে বললাম, ‘ভাই মাফ করেন, আমার কবিতা আর গল্পের বইয়ের প্রকাশক ঠিক হয়ে গেছে, তাঁরা সাহিত্যের বিচারেই আমার বই নিয়েছেন। আমার জন্য আপনাকে এখন আর কিছু করতে হবে না।’

যাই হোক ওনাকে বিদায় দেবার পরই ভাবলাম, আমি গাইড বের তো করব না। কিন্তু এই ভোকাবিউলারি শিখার কৌশলগুলি তো বিনামূল্যে দিয়ে দিতে পারি, নিজেই অডিও বা ভিডিও করে অইনলাইনে দিয়ে দিতে পারি। আমার যেহেতু কাজে লেগেছিল, তো অন্যদের কাজে লাগতেই পারে। উত্তরসূরীদের ভোকাবিউলারি ভীতি যদি একটুও দূর হয়, তাতেই তো স্বার্থকতা। তো আমার সেই ভাবনা থেকেই আমি কিছু ভোকাবিউলারি টিউটোরিয়াল এখানে দেব।

সেই অভিজ্ঞতা থেকে ভোকাবিউলারির জন্য আমার তৈরি করা ১২ টা ভিডিও টিউটোরিয়াল Youtube এ আছে। প্রতিটা ৫-৭ মিনিটের ভিডিও, ১২ টা ভিডিও মিলে মোট ৭০-৭৫ মিনিট। ‘Sujan Debnath’ লিখে Youtube –এ সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে। যদি এগুলো প্রাকটিস করতে চান, তাহলে, আমার পরামর্শ হল – কয়েকবার শুনতে হবে। ডাউনলোড করে গানের মত শুনলেও কাজে দিতে পারে। সবমিলে ৩৯ টা শব্দের গ্রুপ আছে। ভিডিওর শব্দগুলোকে খাতায় লিখে ফেলতে পারেন। এরপর যেখানে যে ওয়ার্ড নতুন পড়বেন, সেটা যদি ওই ৩৯ টা গ্রুপের কোনটার সাথে মিলে যায়, সেখানে লিখে ফেলবেন। না মিললে নতুন গ্রুপ করে লিখে ফেলবেন। এভাবে আপনার নিজের একটা ভোকাবিউলারি খাতা হয়ে যাবে। ২-৩ সপ্তাহেই দেখবেন অনেক অনেক কনফিডেন্ট হয়ে গেছেন। পরে ১৫দিন পর পর পুরা ওয়ার্ড খাতাটা রিভাইস করবেন। ভোকাবিউলারির কোন সাজেসশন হয় না, এক্ষেত্রে কনফিডেন্ট হতে পারাটাই আসল। শুধু ভোকাবিউলারি পড়লেই হবে না, আগের বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার যা এসেছিল, সেগুলোর মত প্রাকটিস করতে হবে। সাথে বাজারের যে কোন ভোকাবিউলারি বইতেই চলবে। আর যারা সময় নিয়ে ভোকাবিউলারি পড়তে চান, তাঁরা Word Smart (I &II) পড়তে পারেন। নিচে ১২ টি ভিডিও লিংকঃ

আসলে সাফল্যের মনে হয় তেমন কোন সর্টকাট নেই, তেমনি ভোকাবিউলারী মনে রাখার সর্টকাট নেই। তো এখানে আমি ক্লু-ফ্লু দিয়ে চেষ্টা করলাম রাস্তাটাকে একটু মসৃণ করতে। একটা অডিও কয়েকবার শুনলে রাস্তাটা সহজ হতে পারে। সবার জন্য শুভকামনা। Ring Your Passion.

//সুজন দেবনাথ