Select Page

সুপ্রিয় ভাইবোনেরা,
৩৫ তম বিসিএসের প্রিলির নতুন সিলেবাস যেদিন দিলো সেই সন্ধ্যায় এই লিখাটা লিখেছিলাম– ক্যানবেরায় বসে। সেটা ২০১৪ সালে। তারপর দুই বছর কেটে গেছে। তিনটা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়ে গেছে। সেই কথা মাথায় রেখে আপডেট করলাম।

এই লেখাটা অনেক বড়। পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারেন। আমি পারতাম ২০টা বাক্যে কিছু বইয়ের নাম আর টপিক বলে লেখাটা শেষ করতে। কিন্তু মন চাইল না। কারণ সিলেবাসে এখন অনেক জিনিস। আর গাইড এলেও সেটা নতুন সিলেবাসের জন্য কতটুকু কার্যকর হবে সন্দেহ আছেই। কারণ সবার জন্যই নতুন। এজন্য আমি প্রতিটা বিষয়ে এই মুহূর্তে ডিটেইলস যা মাথায় এসেছে সব লিখার চেষ্টা করছি। তাই পড়তে পড়তে মনে হতে পারে, আরে এত্ত কিছু। কবে শেষ হবে! আসলে এমনটা মনে হবেই। সেজন্যেই আগে বলে দিচ্ছি – আমি ইচ্ছে করেই ডিটেইলস লিখেছি বলে অনেক কিছু মনে হবে। প্রিলির জন্য আপনাকে ২০০ পেতে হবে না। তাই কিছু শেষ না হলে না হবে। এসব পরীক্ষায় প্রিপারেশনের শেষ বলে কিছু নেই। পুরোপুরি সেটিসফাইড হয়ে পরীক্ষা হলে যায়, এমন লোক একজনও নেই। এই যে সেটিসফায়েড না হওয়া, এটাই আপনাকে পথে রাখবে। তাই কনফিডেন্ট হোন – বাংলাদেশের ১০০, ২০০, ৫০০ বা ১০০০ জনের মধ্যে আপনি আছেনই। আর প্রিলিতে তো আরও অনেক কোয়ালিফাই করবে। তো না হবার আসলেই কিছু নেই। আপনি চাইলেই সময় কথা বলবে।

বিষয়ভিত্তিক আলোচনার আগে কয়েকটা বেদবাক্য বা ফরজ বলে নেই। নাইলে বলতে ভুলে যাবঃ

সিলেবাস আর আগের বছরের প্রশ্ন – এদুটোই আপনার ফোকাস। বাকি যে বা বলে এমনকি আমার কথাও) – সেই কথায় পাত্তা দেবার আগে দুইবার ভাববেন।

এক সেট গাইড বের হলেই কিনে ফেলুন। আমি এখানে কোন বইতে সিলেবাসের কি আছে, সেটা দিতে চেষ্টা করেছি।

অনেক পড়া। তাই সিলেবাস আর আগের প্রশ্নের বাইরে এলোমেলো জিনিসে সময় দিয়েন না একেবারেই।

অবশ্যই প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্ন এনালাইসিস করুন। মানে প্রতিটা বিষয়ে কোন চ্যাপ্টার থেকে কি এসেছে দেখুন। এই কাজটা নিজে নিজে করুন। অন্য কেউই পূর্ণাংগভাবে বলবে না। সে যেটা পড়েছে সেটাি বেশি বেশি বলতে চেষ্টা করবে। তাই প্রশ্ন এনালাইসিস নিজে করুন। যে কোন গাইড থেকেই এট করতে পারবেন। আগের পরীক্ষায় যেটা এসেছে, শুধু সেটা মুখস্ত করা নয় – একই রকম জিনিস আর একটা আসলে পারতে হবে – সেটা হলো প্রিপারেশান। এটাই টার্গেট।

অনেকটা প্রিপারেশানের পর একটা ২০০ নম্বরের মডেল টেস্টের গাইড কিনে ফেলুন। যতবেশি সম্ভব মডেল টেস্ট নিজে নিজে সময় ধরে দিবেন।

পরীক্ষায় ভুল উত্তর করবেন না, মাইনাস নম্বরের কথা ভালভাবে মাথায় রাখুন।

চাকরির পরীক্ষার সবচেয়ে ভাইটাল হলো ম্যাথ।

সিলেবাসটা খুলে নিন, সুবিধা হবে।

বাংলাঃ ৩৫ নম্বরঃ বাংলার সিলেবাসে দুটি অংশ। ভাষা – ১৫ নম্বর, সাহিত্য – ২০ নম্বর।

ভাষাঃ ১৫ নম্বর
=> প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, বানান ও বাক্যশুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দঃ এগুলো এইচএসসির যে কোন ব্যাকরণ বইয়ে আছে। এর মধ্যে ‘ভুল-শুদ্ধি’ আর ‘পরিভাষা’ আগের সিলেবাসে লিখিত পরীক্ষায় ছিল। তাই আগের বাংলা রিটেন গাইড (যে কোনটা) দেখতে পারেন। অবশ্যই রিটেনে যে বাক্যশুদ্ধি আর পরিভাষা এসেছিল, সেগুলো আগে দেখুন। সিলেবাসে ‘বানান ও বাক্যশুদ্ধি’ আছে। তো এর জন্য এইচএসসির ব্যাকরণ বই তো দেখবেনই। সেই সাথে অবশ্যই নবম-দশম শ্রেণীর বোর্ডের ব্যাকরণ বই থেকে কয়েকটা চাপ্টার দেখতে পারেনঃ ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান, বাক্য (বাক্যের গুণ মানে আকাংক্ষা, আসত্তি, যোগ্যতার চাপ্টারটা), বচনের চাপ্টারেও কিছু নিয়ম আছে।
=> ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস : এগুলোর জন্য নবম-দশম শ্রেণীর বোর্ডের ব্যাকরণ বই যথেষ্ট। এখন কথা হল – সিলেবাসে এই কয়টা জিনিস স্পেসিফিকভাবে দেয়ায় একটা ধোঁয়াশা তৈরি হল। সিলেবাসে ‘শব্দ’ উল্লেখ আছে। এর মানে কি? শুধু শব্দের চাপ্টার নাকি শব্দতত্ত্ব বলতে ব্যাকরণে যা বুঝায় সেটা? আবার লক্ষ্য করুন প্রত্যয়, সমাস এগুলো উল্লেখ আছে। এগুলো দিয়ে কিন্তু শব্দই তৈরি হয়। কিন্তু উপসর্গ, বচন, লিঙ্গ এগুলো উল্লেখ নাই। এগুলোও শব্দতত্ত্বেরই অধীনে। আর আগের প্রিলিমিনারি প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, উপসর্গ, বচন এগুলো থেকে অনেক প্রশ্ন এসেছে। তাই এখানে কি পড়বেন সেই সিদ্ধান্তে একটু জটিলতা আছে। তো আমার পরামর্শ হল – আগে সরাসরি যেগুলো উল্লেখ আছে, সেই চ্যাপ্টারগুলো পড়ুন, তারপর সেই সাথে রিলেটেড জিনিসও অবশ্যই পড়তে হবে।

ধ্বনি, বর্ণ, উচ্চারণ স্থান, ধবনি পরিবর্তন, শব্দ, শব্দের শ্রেণীবিভাগ (উৎপত্তি, গঠন ও অর্থ অনুসারে), পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস এগুলোর জন্য আলাদা আলাদা চ্যাপ্টার নবম-দশম শ্রেণীর বইটায় আছে। আর এর সাথে সম্পর্কিত চাপ্টারগুলোও বাদ দেয়া যাচ্ছে না। তার মানে কি? আমার দৃষ্টিতে এর মানে হল – এই চাপ্টারগুলোর গুরুত্ব বেড়ে গেল। আর আপনি নিশ্চয়ই এতদিনে আগের প্রশ্ন এনালাইসিস করেছেন। সেই আলোকে অন্য চ্যাপ্টারগুলোও পড়ুন।

সাহিত্যঃ ২০ নম্বর

সাহিত্যের জন্য আমার পছন্দের বই – সৌমিত্র শেখরের ‘জিজ্ঞাসা’। আর হুমায়ুন আজাদের ‘লাল নীল দীপাবলী’।
সিলেবাসে সাহিত্যের জন্য আবার ২টা অংশ স্পেসিফিক করে দিয়েছে। প্রাচীন ও মধ্যযুগ-৫ নম্বর, আধুনিক যুগ (১৮০০ থেকে বর্তমান)-১৫ নম্বর। এখন আগের রিটেনের সিলেবাসে বাংলার সাহিত্যের কিছু জিনিস উল্লেখ ছিল। এগুলো হল (আমি আগের সিলেবাসটা থেকে কপি করে দিলাম) – Charyapada, Mangal Kavya, Romantic Kavya, Fort William College, Vidyasagar, Bankimchandra Chatterjee, Madhusadan, Mir Mossarraf Hossain, Rabindranath Tagore, Dinobondhu Mittra, Kazi Nazrul Islam, Jashim Uddin, Begum Rokeya, Farrukh Ahmed, Kaikobad, Modern and Contemporary poets, writers and playrights of Bangla literature. এখানে ১১ জন কবি-সাহিত্যিকের নাম সরাসরি দেয়া ছিল। আর সাথে আধুনিক ও সমকালীন কবি, সাহিত্যিকদের কথা উল্লেখ ছিল। এখন ২৭-৩৪ বিসিএসের প্রিলি প্রশ্ন এনালাইসিস করলে দেখবেন বাংলার ২০ নম্বরের মধ্যে এগুলো থেকে ১৫ টার মত আসত। তাই এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ন ছিল। এই ১১ জনের সবকিছু পড়ে ফেলুন। আর আধুনিক ও সমকালীন কবি, সাহিত্যিকদের মধ্যে আগের প্রশ্ন দেখে বাছাই করুন – কারা গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকজনের নাম চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায় – শামসুর রাহমান, শহীদুল্লাহ কায়সার, জহির রায়হান, মুনির চৌধুরী, সুফিয়া কামাল, সেলিম আল দীন, সেলিনা হোসেন, নির্মলেন্দু গুণ এরকম আরো অনেকেই। আমি এই মুহূর্তে যা মাথায় আসল, তাঁদের নামই লিখলাম। মানে এখানে আরও অনেকেই আসবে। আর যদি কোন কবি, সাহিত্যিক সাম্প্রতিক সময়ে মারা যান, তাঁর তথ্য যে কোন পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপুর্ণ। এছাড়া আগের রিটেনের সিলেবাসটায় বড় একটা ফাঁক ছিল। সেটা হল – প্রমথ চৌধুরী (চলিত ভাষায় অবদানের জন্য যাকে যে কোন বাংলা বিশেষজ্ঞ অনেক উপরে রাখেন), শরৎচন্দ্র (উপন্যাসকে যিনি দুপুরের ঘুমের ঔষধ বানিয়ে দিয়েছিলেন), ৩-বন্দ্যোপাধ্যায় (মানিক, বিভূতি, তারাশংকর), কবিতার পঞ্চ-পাণ্ডব (জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব, সুধীন্দ্রনাথ, বিষ্ণু দে, অমিয় চক্রবর্তী), সুকান্ত ভট্টাচার্য – এরা ছিল না। কিন্তু এদের থেকে প্রশ্ন সব সময়ই আসত। তাই এদেরকে হেলাফেলা না করাই উচিত। পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে জীবনানন্দ আর বুদ্ধদেবের সব কিছু পড়ে ফেলুন, এরা বাংলাদেশের (পূর্ববংগের) মানুষ ছিলেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় হল সেই ব্যক্তি, যিনি বাংলা সাহিত্যে আলট্রা-রোমান্টিসিজম থেকে বের হয়ে বাস্তব জীবনের ছোঁয়া দিয়েছিলেন। আর মানিকের লেখায় পূর্ববাংলা গুরুত্ব পেয়েছিল। তাই মানিকের সব কিছু পড়ে ফেলা উত্তম। শিশু সাহিত্যের কথা ধরলে সুকুমার রায় বাংলার একাধিপতি। তাঁরও ডিটেইলস পড়া উচিত।

ইংরেজীঃ ৩৫ নম্বর

আগে সিলেবাসটা সরাসরি কপি করি – PART- I : Language 20 নম্বর। A) Parts of Speech: The Noun (The Determiner, The Gender, The Number), The Pronoun, The Verb-(The Finite: transitive, intransitive; The Non-finite: participles, infinitives, gerund; The Linking Verb, The Phrasal Verb, Modals), The Adjective, The Adverb, The Preposition, The Conjunction. / B) Idioms & Phrases: Meanings of Phrases, Kinds of Phrases, Identifying Phrases / C) Clauses: The Principal Clause, The Subordinate Clause (The Noun Clause, The Adjective Clause, The Adverbial Clause & its types). / D) Corrections: The Tense, The Verb, The Preposition, The Determiner, The Gender, The Number, Subject-Verb Agreement / E) Sentences & Transformations: The Simple Sentence, The Compound Sentence, The Complex Sentence, The Active Voice, The Passive Voice, The Positive Degree, The Comparative Degree, The Superlative Degree. / F) Words: Meanings, Synonyms, Antonyms, Spellings, Usage of words as various parts of speech, Formation of new words by adding prefixes and suffixes. / G) Composition: Names of parts of paragraphs/letters/applications
লক্ষ্য করুন, সিলেবাসে মোটামুটি একটা গ্রামার বইয়ের সূচীপত্র তুলে দেয়া হয়েছে। তারপরেও একটা ডিটেইলস কিছু যে আছে সেটা ভালই হয়েছে। আর ভোকাবিউলারিকে গ্রামারের সাথে দেয়া হয়েছে।

ইংরেজীর এর জন্য বইঃ English for Competitive Examination – এ বইটা আগের বছরের বিসিএস এবং অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্নের সলিউশনের জন্য অনেকেই ফলো করে। কিছু ভুল বাদ দিলে এটা থেকে প্রশ্নের ভাল ধারণা হয়। ইংলিশের সব গাইডই ভুলে ভরা, তাই সাবধান হতে হবে। এই বইটা থেকে আগের বছরের প্রশ্ন সলভ হবে, কিন্তু ডিটেইল গ্রামারের নিয়ম পড়া হবে না। গ্রামার এর জন্য যে কোন ইন্টার মিডিয়েট লেভেলের গ্রামার বইয়েই চলবে। আগে যেটা পড়েছেন সেটাই পড়ুন। আগে যারা P. C. Das, বা Wren & Martin English Grammar পড়েছেন, তাঁরা অবশ্যই এগুলোই পড়বেন। আর আগে যারা এগুলো পড়েননি, তাঁরা ৩৫-তমের জন্য এখন এগুলো শুরু করার দরকার নেই। অন্য যেটা পড়েছেন, তাতেই হবে। সেটা Advance Learners এর মত হলেও চলবে। এখন এই গ্রামার বই আপনাকে বেসিক নিয়ম শিখাবে, তাতেই ৭০% কাজ হয়ে যায়। কিন্তু এইসব গ্রামার বইতে চাকরির প্রশ্নের মত করে নিয়মগুলো অনেক সময়ই দেয়া থাকে না। তাই গ্রামারের নিয়মের জন্য বাজারের যে কোন জব গ্রামার বই (saifur’s, mentors, oracle যা আছে বাজারে- যে কোনটা) দেখুন।

এবার গ্রামারের যে সব টপিক সিলেবাসে দেয়া আছে সেগুলো দেখিঃ

=> প্রথমে দেখি G) Composition: Names of parts of paragraphs/letters/applications: এখানে ২টা জিনিসের কথা বলা হইছে।
(১) ইংরেজী চিঠি/এপ্লিকেশানের বিভিন্ন অংশের নাম – এটা তো আমরা স্কুলে vii-viii এ পড়েছি। ওই ক্লাসের গ্রামার বইয়ে এখনো আছে। নিজে খাতায় লিখে ফেলতে পারেন। আর সহজ জিনিস, যে বিসিএস গাইডে আছে। (২) parts of paragraphs: একটা প্যারাগ্রাফের কি কি অংশ থাকে সেটা সিলেবাসে আছে। এটা নতুন সংযোজন মনে হচ্ছে। কিন্তু জিনিস সোজা। একাডেমিক রাইটিংয়ে একটা paragraph-এ ৩টা পার্ট থাকেঃ (i)Topic Sentence (ii) Body বা supporting sentence (iii) Concluding Sentence. আমি একটা উদাহরণ দেই। ধরুন, আমি একটা আর্টিকেল লিখছি – ‘Why Bangladeshi Peacekeepers are more reliable than the Pakistani peacekeepers.’ আসলে আমি থিসিস করছি শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের সাফল্য – অন্য দেশের সাথে আমাদের তুলনা নিয়ে। তাই এই উদাহরণটাই মাথায় আসল। যাই হোক, ধরুন এতে বাংলাদেশ যে ভাল, তার কয়েকটা ইস্যু খুঁজে পেলাম। এখন যেভাবে ইচ্ছা লিখলে সেটা একাডেমিক রাইটিং হবেনা। প্রতিটা ইস্যুর জন্য একটা করে paragraph লিখব। ধরি ১ম ইস্যু হল – বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যাকগ্রাউন্ড আর পাকিস্থানের সামরিক শাসনের কারণে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে প্রিফার করে। এই ইস্যুটা নিয়ে যে paragraph টা লিখব তাতে তিনটা অংশ থাকবে। (i)Topic Sentence (ii) Body বা supporting sentence (iii) Concluding Sentence. এখানে Topic Sentence মানে প্রথম বাক্যে–এ শুধু ইস্যুটা বলব। মানে ‘main idea’ টা। এই বাক্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে যে, এই paragraph টা কি নিয়ে লিখব। মানে এই topic sentence দিয়ে paragraph টাকে control করা হয়। যাতে অন্য বিষয় চলে না আসে। তাই topic sentence কে controlling sentence বা controlling idea বলা হয়। Topic Sentence এর পর কয়েকটা বাক্যে এই ইস্যুটিকে ডিটেইলস বলল। এই ডিটেইলস অংশকে বলে Body বা supporting sentence. এতে উদাহরণ, কোটেশান, কারণ, ডেটা (reasons, examples, statistics, facts, quotations) এসব থাকবে। আর সবশেষ বাক্যে আবার পুরো paragraph টাকে summarize করর। এজন্য শেষ বাক্যটিকে Concluding Sentence বা Concluding remark বলে।

=> সিলেবাসের গ্রামার অংশের (A) থেকে (E) তে শুধু টপিকের নাম। এগুলো গ্রামার বই থেকে পড়ে ফেলুন। এখানে Transformation of Sentence আর Correction এর টপিক সরাসরি দেয়া আছে। এই এই টপিকগুলোতে জোর দিন। আর গ্রামারের জন্য আগের প্রশ্ন এনালাইসিস করে প্রতিটি প্রশ্ন কোন নিয়মে হয়েছে, সেটি আলাদা আলাদা টপিক করে লিখে ফেলুন। টানা এক সপ্তাহ গ্রামারে সময় দিন – হয়ে যাবে।

=> (F) Words: Meanings, Synonyms, Antonyms, Spellings, Usage of words as various parts of speech, Formation of new words by adding prefixes and suffixes: এখানে ভোকাবিউলারি আর, নতুন শব্দ গঠনের কথা বলা হয়েছে। বাজারের যে কোন ভোকাবিউলারি বইতেই চলবে। অবশ্যই আগের প্রশ্ন প্রথমে সলভ করবেন। আর যারা সময় নিয়ে ভোকাবিউলারি পড়তে চান, তাঁরা Word Smart (I &II) পড়তে পারেন। এছাড়া ভোকাবিউলারির জন্য আমার তৈরি করা ১২ টা ভিডিও টিউটোরিয়াল Youtube এ আছে, ওগুলো ডাউনলোড করে কয়েকবার শুনতে পারেন। ‘Sujan Debnath’ বা ‘অব্যয় অনিন্দ্য’ লিখে Youtube –এ সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে। যদি এগুলো প্রাকটিস করতে চান, তাহলে, আমার পরামর্শ হল – কয়েকবার শুনতে হবে আয়ত্ত্ব হতে হলে। ডাউনলোড করে গানের মত শুনলেও কাজে দিতে পারে। ভিডিওর শব্দগুলোকে খাতায় লিখে ফেলতে পারেন। এরপর যেখানে যে ওয়ার্ড পড়বেন সেটা যদি ওই ৩৯ টা গ্রুপের কোনটার সাথে মিলে যায়, সেখানে লিখে ফেলবেন। না মিললে নতুন গ্রুপ করে লিখে ফেলবেন। এভাবে আপনার নিজের একটা ভোকাবিউলারি খাতা হয়ে যাবে। ২-৩ সপ্তাহেই দেখবে অনেক অনেক কনফিডেন্ট হয়ে গেছেন। পরে ১৫দিন পর পর পুরা ওয়ার্ড খাতাটা রিভাইস করবেন। ভোকাবিউলারির কোন সাজেসশন হয় না, এক্ষেত্রে কনফিডেন্ট হতে পারাটাই আসল। শুধু ভোকাবিউলারি পড়লেই হবে না, আগের বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার যা এসেছিল, সেগুলোর মত প্রাকটিস করতে হবে। তবে এখন যেহেতু পরীক্ষা খুব কাছে তাই সারাদিন বসে ভোকাবিউলারি পড়ার টাইম নাই।

PART- II: Literature 15: সিলেবাসঃ [ English Literature: Names of writers of literary pieces from Elizabethan period to the 21st Century. Quotations from drama/poetry of different ages। ] মানে লেখকের নাম, উপাধি, বইয়ের নাম, চরিত্রের নাম, কোটেশান আর যুগ বিভাগ এসব। সেটা এলিজাবেথান পিরিয়ড থেকে আধুনিক পর্যন্ত। এইটা একটু নতুন সংযোজন। মানে ১৫ নম্বর এখান থেকে আসবে, তাই এটার দিকে নজর দিতেই হবে। সবার আগে আগের বিসিএস, অন্য চাকরির পরীক্ষা আর ভার্সিটি এডমিশান টেস্টে ইংরেজী সাহিত্য থেকে কি এসেছিল – সেটা দেখুন। তারপর বাজারের কোন একটা বই থেকে ইংরেজী সাহিত্যের ইতিহাসটা জেনে নিন। ইতিহাস একটু জানলে বই, লেখক এদের নাম মনে রাখতে সুবুধা হবে। আমি চেষ্টা করব, সময় পেলে ইংরেজী সাহিত্যের উপর একটা বড় আর্টিকেল লিখতে। তবে আমি এই বিষয়ে একপার্ট নই। তবুও এখানে দু’এক লাইন করে লিখে দিচ্ছি। যাতে যারা আগে পড়েননি তাঁরা শুরু করতে পারেন। যাতে গাইড থেকে বা অন্য কোথাও পড়লে যেন মনে না হয় – এম্মা, এগুলো কি! নিচে খুবই সংক্ষিপ্ত একটু দিলাম। আর একটু ডিটেইলস পড়তে হবে।

Periods of English Literature:

=> Elizabethan period (1558–1625): রাণী প্রথম এলিজাবেথ আর রাজা জেমস-১ এর শাসনকালে ট্রাজেডি ভিত্তিক থিয়েটারের যুগ। এই সময়ের বিখ্যাতদের মধ্যে Edmund Spenser, William Shakespeare, Ben Jonson, and Christopher Marlowe এরকম কয়েকজন। এদের কিছু বইয়ের নাম, ২/১টা কোটেশান আর শেক্সপিয়ারের জন্ম-মৃত্যুসহ ডিটেইলস জানতে হবে।

=> Neo-Classical Period (1660–1798): আঠার শতকের শেষ পর্যন্ত এই যুগ। এর আবার তিনটা ভাগ আছে। এযুগের কয়েকজন বিখ্যাত সাহিত্যিক হলেন John Milton (ওনার Paradise Lost এর কথা আমরা জানি), Alexander Pope, Jonathan Swift, Samuel Johnson (১ম ইংরেজী ডিকশনারি এই জনসনের)।

=> Romanticism (1798–1837): ১৭৯৮ সালে William Wordsworth এবং Samuel Taylor Coleridge কিছু গীতিকবিতা লিখেন, যেগুলোকে Lyrical Ballads বলে। আমাদের HSC তে এই S. T. Coleridge এর ‘The Ancient Mariner’ ছিল ইংরেজী বইয়ের প্রথম গল্প। আসলে আমাদের জন্য এটা গল্প আকারে দেয়া হয়েছিল। এটা ছিল তাঁর কবিতা ‘The Rime of the Ancient Mariner’- ১৭৯৮ সালে প্রকাশিত। এর বিখ্যাত লাইনগুলো আমরা শুনেছি-
“Water, water, everywhere, // And all the boards did shrink; // Water, water, everywhere, // Nor any drop to drink”
একেবারে রবীন্দ্রনাথ বা তাঁর আগের বিহারীলালের ছন্দের মত, তাই না? এগুলো গীতিকবিতা।

যাই হোক, এটা প্রকাশের সাথেই শুরু হয় ইংরেজী সাহিত্যের রোমান্টিক যুগ। তাহলে রোমান্টিক যুগের বিখ্যাতরা হলেন William Wordsworth, Samuel Taylor Coleridge, William Blake. এনারা হলেন রোমান্টিক যুগের ফার্স্ট জেনারেশন। আর সেকেন্ড জেনারেশান রোমান্টিক কবিরা হলেন বায়রন, শেলী, কিটস (Lord Byron, Percy Bysshe Shelley, John Keats). ১৮৩৭ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন। এরপর শুরু হয় ভিক্টোরিয়ান যুগ।

=> Victorian literature (1837–1901): রাণী ভিক্টোরিয়ার ক্ষমতা গ্রহণ থেকে এই যুগ। এই যুগে উপন্যাস জনপ্রিয় মাধ্যম হয়। এযুগের বিখ্যাতদের মধ্যে Charles Dickens, George Eliot, Robert Browning, Alfred Lord Tennyson ইত্যাদি। ডিকেন্সের কথা আমরা জানি। ফরাসী বিপ্লবের পটভূমিতে প্যারিস আর লন্ডনকে নিয়ে লেখা তাঁর “A Tale of Two Cities” তো বেস্ট সেলিং বই। আর টেনিসন ছিলেন রানী ভিক্টোরিয়ার রাজকবি।

=> ১৯০১ সাল থেকে আধুনিক যুগ। এসময়ের কিছু বইয়ের লেখকের নাম জানতে হবে। টি এইচ এলিয়ট থেকে আজকের চেতন ভগত যে কেউই হতে পারে। কিছু বইয়ের নাম বার বার জোরে জোরে বলবেন, অন্য কাউকে শোনাবেন।
এই যুগবিভাগে বিভিন্ন জায়গার কিছুটা পার্থক্য দেখা যায়। তাই গাইডে বা অন্য কোথাও কিছু অমিল বা উপযুগ থাকতে পারে।

মানসিক দক্ষতাঃ ১৫ নম্বর

সিলেবাসে যা আছেঃ 1. ভাষাগত যৌক্তিক বিচার (Verbal Reasoning) / 2. সমস্যা সমাধান (Problem Solving) / 3. বানান ও ভাষা (Spelling and Language) / 4. যান্ত্রিক দক্ষতা (Mechanical Reasoning) / 5. স্থানাংক সম্পর্ক (Space Relation) / 6. সংখ্যাগত ক্ষমতা (Numerical Ability)

বাজারের যে কোন গাইড। রিটেনে ম্যাথের সাথে মানসিক দক্ষতার এমসিকিউ আছে। ঐ প্রশ্নগুলোও সলভ করে ফেলুন। এবার এই ৬টা বিষয় নিয়ে একটু আলাপ করি।

=> Verbal reasoning মানে হল একটু প্যাঁচের কথাবার্তা দিয়ে একটা প্রশ্ন দেয়া। অনেক ধরনের verbal reasoning হয়। নিচের লিংকটা দেখুন। এটা একটা ইন্ডিয়ান সাইট। এতে ২১ ধরনের verbal reasoning এর উদাহরণ উত্তরসহ আছে।
http://www.indiabix.com/verbal-reasoning/questions-and-answers/
এছাড়া আরেক ধরনের প্রশ্ন হয়, এতে একটা Paragraph দেয়া হয়। তারপর একটা বাক্য লিখে বলে যে paragraph অনুযায়ী এটা True/False/Not Given. এরকম একটা প্যারাগ্রাফ থেকেই ৩/৪ টা প্রশ্ন হতে পারে। জিনিস কঠিন না। তবে প্রশ্নের ধরনের সাথে পরিচয় থাকলে সুবিধা হবে। নিচের লিংকে এমন একটা উদাহরণ আছে।

http://www.shldirect.com/en/assessment-advice/example-questions/verbal-reasoning
=> Problem Solving আর Spelling and Language নিয়ে বলার কিছু নেই। Problem Solving এ যে কোন বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশ্ন দিতে পারে। আর Spelling and Language মানে বানান, ছোট-খাট সাধারণ জ্ঞান আগেও আসত রিটেনের মানসিক দক্ষতায়।
=> Mechanical Reasoning মানে হল ছবি দিয়ে ম্যাথের মত প্রশ্ন। এগুলো সহজও হয়, আবার অনেক কঠিনও আছে। এখানে দুটো লিংক দিলাম। তাড়াহুড়ায় তেমন সহজ খুঁজে পেলাম না। এগুলো একটু কঠিন। বিসিএসে সহজটাই আসবে। একবার চোখ বুলাতে পারেন। ১। http://www.bcit.ca/files/tlc/pdf/tlc_sampletest_mechreasoning.pdf

২। http://www.psychometric-success.com/practice-papers/psychometric%20success%20mechanical%20reasoning%20-%20practice%20test%201.pdf
=> Space Relation: এটা থেকে রিটেনে অনেক প্রশ্ন এসেছে। ছবি দিয়ে বলে কোনটা থেকে কি বানানো যায় ইত্যাদি। আবার একটা শব্দ দিয়ে কোন বর্ণের আগে/পরে কোন বর্ণ – এরকম। যেমন,
Identify the letter to the right of L in the word LION. ans: (A). O (B). N (C). I (D). L
হা হা, এখানে L এর ডানপাশের বর্ণটা কি? ক্লাশ ওয়ানের বাচ্চারাও বলবে, উত্তর I. তবে এত সহজ আসার কথা না। নিচের লিংকে কটা উদাহরণ আছে।
http://worksheets.tutorvista.com/spatial-relation-test-questions.html
=> Numerical Ability মানে তো ম্যাথ। এতে সিরিজ, ছকের মধ্যে সংখ্যা খুঁজে বের করা, ছোট খাট জ্যামিতির চিত্র দিয়ে প্রশ্ন করা এসব থাকে।
মানসিক দক্ষতার প্রশ্ন বাংলা ও ইংরেজী মিলিয়েই হয়।

গাণিতিক যুক্তিঃ ১৫ নম্বর

সিলেবাসঃ ১। বাস্তব সংখ্যা, লসাগু, গসাগু, শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, অনুপাত ও সমানুপাত, লাভ ও ক্ষতি। নম্বর-৩./ ২। বীজগাণিতিক সূত্রাবলী, বহুপদী উৎপাদক, সরল ও দ্বিপদী সমীকরণ, সরল ও দ্বিপদী অসমতা, সরল সহসমীকরণ। নম্বর-৩./ ৩। সূচক, লগারিদম, সমান্তরাল ও গুণোত্তর অনুক্রম ও ধারা। নম্বর-০৩./ ৪। রেখা, কোণ, ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজ সংক্রান্ত উপপাদ্য, পিথাগরাসের উপপাদ্য, বৃত্ত সংক্রান্ত উপপাদ্য, পরিমিতি-সরল ক্ষেত্র ও ঘনবস্তু। নম্বর-০৩./ ৫। সেট, বিন্যাস ও সমাবেশ, পরিসংখ্যান ও সম্ভাব্যতা। নম্বর-০৩.

একেবারেই ক্লাশ viii এবং ix-x এর বইয়ের সিলেবাস। সাথে যে কোন বিসিএস গাইড।

=> বাস্তব সংখ্যাঃ ix-x এর বইয়ে বাস্তব সংখ্যা চ্যাপ্টারে দুরত্ব নির্ণয়, মূলদ-অমূলদ এরকম কিছু জিনিস আছে।

=> লসাগু, গসাগু, শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, অনুপাত ও সমানুপাত, লাভ ও ক্ষতিঃ ক্লাস viii এর বই।

=> বীজগাণিতিক সূত্রাবলী, বহুপদী উৎপাদক, সরল ও দ্বিপদী সমীকরণ, সরল ও দ্বিপদী অসমতা, সরল সহসমীকরণ, সূচক, লগারিদম, সমান্তরাল ও গুণোত্তর অনুক্রম ও ধারাঃ ix-x এর বই। সূচক আর লগ থেকে ছোট ছোট কিন্তু ক্রিটিকাল ম্যাথ প্রাকটিস করুন। সূচক আর লগের সূত্রগুলো উদাহরণ দিয়ে বুঝে ফেলুন। এখান থেকে আসবেই বলে মনে হয়। অসমতা থেকে সমাধান (সহজ জিনিস) ১৫ মিনিট দেখে ফেলুন। ধারার সূত্র, কত-তম পদ বের করা, আর যোগফল বের করা দেখে ফেলুন। সাথে n(n+1)/2 ধরনের কয়েকটা সূত্রে যেন কনফিউশান না থাকে।

=> রেখা, কোণ, ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজ সংক্রান্ত উপপাদ্য, পিথাগরাসের উপপাদ্য, বৃত্ত সংক্রান্ত উপপাদ্য, পরিমিতি-সরল ক্ষেত্র ও ঘনবস্তুঃ ix-x এর জ্যামিতি বই। উপপাদ্য আর অনুসিদ্ধান্তগুলো চিত্র একে উদাহরণসহ বুঝে ফেলুন। এই উপপাদ্যগুলো আর কোন, রেখা, ত্রিভূজের বেসিক সূত্রের ম্যাথ গাইড থেকে প্রাকটিস করুন। আর পরিমিতির সূত্র আর ওই সূত্রের খুব ছোট ম্যাথ দেখতে পারেন।

=> সেটঃ ix এর বই থেকে সেটের থিউরি মানে উপসেট, সংযোগ সেট, ছেদ সেট এমন ছোট ছোট জিনিস বের করা, সাথে সেট কে আবিষ্কার করেন, ভেন চিত্র কার নামে এসব।

=> বিন্যাস ও সমাবেশ, পরিসংখ্যান ও সম্ভাব্যতাঃ এগুলো ইন্টারমিডিয়েটের ম্যাথে আছে। তাই সায়েন্সের স্টুডেন্টরা করেছেন। যারা দেখেননি তাঁরা গাইডেই পাবেন। বিন্যাস-সমাবেশ আর প্রোবাবিলিটির ছোট ছোট ম্যাথ ব্যাংকের পরীক্ষায় আসে। তাই ম্যাথ গাইড বা এমবিএ-গাইডে অবশ্যই আছে। পরিসংখ্যান এর বেসিক কিছু সংজ্ঞা আর সুত্র যেমন গড়, মধ্যক, প্রচূরক, টালি এগুলো ইন্টার মিডিয়েট পরিসংখ্যন বইয়ে পাওয়া যাবে।

ম্যাথ যাতে কুইক, আর অল্প একটু লিখেই করে ফেলা যায়, সেই অভ্যাস করতে হবে। এটা প্রাকটিসে উন্নতি হবে। আগের প্রশ্ন ও নতুন সিলেবাস অনুযায়ী প্রাকটিস করুন। একই জিনিস সংখ্যা পাল্টে দিলে কত তাড়াতাড়ি করতে পারেন সেটাই বিষয়। এটা প্রাকটিস করলে উন্নতি হবে। আর ম্যাথের হিসাব মুখে মুখে যত বেশি করা যায় – তত সময় বাঁচবে। ভালোভাবে ম্যাথ করুন। ম্যাথ ভীষণ ভাইটাল। এটা ভালো পারলে চাকরির পরীক্ষায় এগিয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ বিষয়াবলীঃ ৩০ নম্বর

বাজারের যে কোন গাইডেই হবে। সিলেবাসের বাংলাদেশ বিষয়াবলী একেবারে স্পেসিফিকভাবে নম্বরসহ দেয়া আছে। সিলেবাসটা খুলে নিলে সুবিধা হবে-

=> ইতিহাস অংশে মাত্র ৬ নম্বর। ইতিহাসের বেশ কিছু জিনিস স্পেসিফিক দেয়া আছে –“বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসঃ ভাষা আন্দোলন; ১৯৫৪ সালের নির্বাচন; ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৬; গণ-অভুত্থান, ১৯৬৮-৬৯; ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন; অসহযোগ আন্দোলন ১৯৭১; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ; স্বাধীনতা ঘোষণা; মুজিবনগর সরকারের গঠন ও কার্যাবলী; মুক্তিযুদ্ধের রণকৌশল; মুক্তিযুদ্ধে বৃহৎ শক্তিবর্গের ভূমিকা; পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয়।” মানে এগুলোতে বেশি জোর দিতে হবে। আর মজার কথা হল- এর সাথে বলা আছে – “প্রাচীনকাল হতে সম-সাময়িক কালের ইতিহাস, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি।” আগের প্রশ্ন দেখে সেইমত জানতে চেষ্টা করুন।

=>সংবিধানের “প্রস্তাবনা ও বৈশিষ্ট্য, মৌলিক অধিকারসহ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহ, সংবিধানের সংশোধনীসমূহ” উল্লেখ আছে। এর মানে হল অনুচ্ছেদ ৪৭ পর্যন্ত আর সংবিধানের বৈশিষ্ট্য ও সংশোধনীসমূহ মিলে ৩ নম্বর। সেই সাথে “বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থাঃ আইন, শাসন ও বিচার বিভাগসমূহ, আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা কাঠামো, প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস ও সংস্কার” – এতে ৩ নম্বর। এখন আইন, শাসন, বিচার বিভাগ মানে এগুলো সংবিধান থেকেই পড়তে হবে। এগুলোর আওতায় অনুচ্ছেদ ৪৮ থেকে শেষ পর্যন্তই আসে। স্থানীয় প্রশাসনিক কাঠামোতে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, সিটি কর্পোরেশন এগুলোর গঠন মানে কতজন মেম্বার এসব, চেয়ারম্যান, মেয়র ইত্যাদি। প্রশাসনিক সংস্কারে নতুন আইন, মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন ইত্যাদি থাকতে পারে। সংবিধান টেকনিক করে ডিটেইলস পড়ুন – রিটেনে এটা লাগবেই। তাই যারা কষ্টটা এখনই করবেন-তাঁদের লাভই হবে।

=> কৃষি – কোথায় কি ভাল জন্মে, কোন গবেষণা কেন্দ্র কোথায়।

=> জনসংখ্যা, আদমশুমারি, জাতিগোষ্ঠী- লাস্ট আদমশুমারির কিছু তথ্য; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোন জেলায় কারা বাস করে, জাতিগোষ্ঠির বিশেষ বৈশিষ্ট্য, উৎসব।

=> অর্থনীতি- সর্বশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে জিডিপি, প্রবৃদ্ধি; বাজেট থেকে এডিপি (এডিপি কিন্তু পরে আবার চেঞ্জ হয়) দেখুন। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা- কবে থেকে কবে। উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন – MDG/SDG, সামাজিক নিরাপত্তা জাল যেমন TR, কাবিখা, বিধবা ও বয়স্ক ভাতা এসব। রাজস্ব নীতি – কত টাকা ট্যাক্স ফ্রি, কোন খাত ট্যাক্স ফ্রি, মুদ্রা যেমন কবে টাকাকে ভাসমান মুদ্রা করা হয় এসব।

=> শিল্প ও বাণিজ্য- আমদানি-রপ্তনীর সর্বশেষ ২/১ টা ডেটা, রিজার্ভ, রেমট্যান্সের লাস্ট ডাটা, EPZ, শ্রম আইন।

=> রাজনৈতিক ব্যবস্থা – দু একটা NGO’র নাম ও কাজ, CBA- Collective Bargaining Agent.

=> বাংলাদেশের জাতীয় অর্জন, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসমূহ, জাতীয় পুরস্কার, বাংলাদেশের খেলাধুলাসহ চলচ্চিত্র, গণমাধ্যম- আগের প্রশ্ন অনুযায়ী।

অন্তর্জাতিক বিষয়াবলী (২০ নম্বর): সিলেবাসে যা লিখা আছে তা আসলে রিটেনের সাথে মিলে, এমসিকিউর জন্য এতে কিছু বোঝার নাই। তাই আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে সিলেবাসের কথা না ভেবে আগের প্রশ্নের আলোকেই প্রিপারেশন নিন যে কোন গাইড থেকে। তবে ‘পরিবেশগত ইস্যু ও কূটনীতি’ কথাটা উল্লেখ আছে। মানে জলবায়ু সম্মেলন ও চুক্তিগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংগঠন, লাইন, প্রণালী, রাজধানী, মুদ্রা, জাতীয় প্রতীক এসব জিনিস টেকনিক করে মনে রাখতে চেষ্টা করা যায়। কোন দেশে কি সবচেয়ে বেশী জন্মে, কোন দেশ কি রপ্তানী করে- এমন জিনিস আগে অনেক এসেছে।

ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (১০ নম্বর): সিলেবাসটা এমসিকিউর জন্য একটু কনফিউজিং। এখানে প্রাকৃতিক ভূগোল যেমন সৌরজগত, বায়ুমণ্ডল … এরকম কিচ্ছুর উল্লেখ নাই। এগুলো বিজ্ঞানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভূগোল বলতে যা আছে সেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক ভূগোল। যাই হোক – এতে বাংলাদেশের সীমানা, সীমান্তবর্তী জেলা, ভুপ্রকৃতি গুরুত্বপূর্ণ। কোন জেলায় কোন প্রাকৃতিক সম্পদ জন্মে, খনিজ পাওয়া যায় এসব। ঘুর্ণিঝড়ের সংকেতসমূহের অর্থ (১ নং, ২নং…), অতীতের ঝড়গুলোর নাম ও নামের অর্থ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যা আছে সেটা সাধারণ জ্ঞানের গাইডেই হবে। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেতের অর্থ – বা এমন কিছু জিনিস আলাদা লিখে নিতে পারেন। নবম শ্রেণীর ভুগোল বইয়ের তথ্যগুলো অনেকে একত্র করেছে। সেগুলো কালেক্ট করতে পারেন।

সাধারন বিজ্ঞান (১৫ নম্বর): আগের প্রশ্ন ঠোঁটস্থ করুন। সিলেবাসে একেবারে স্পেসিফিকভাবে অনেক কিছু দেয়া আছে। এত জিনিস নিজে নিজে গুছাতে সময় লাগবে। তাই গাইডে দেখুন – সিলেবাসে যা আছে সেটা ওরা দিয়েছে কিনা। না দিলে বই ও ইন্টারনেটে দেখার চেষ্টা করতে পারেন। সিলেবাসে ৩ টা পার্ট। এগুলো বেশীর ভাগ জিনিস নবম শ্রেণীর পদার্থ, রসায়ন, জীব, সাধারন বিজ্ঞান বইতে আছে। কিছু জিনিস ভূগোল ও অষ্টম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইতে আছে। আর রোগ সংক্রান্ত বিষয়গুলা গাইডে মোটামুটি থাকে। সাধারণত বিজ্ঞানের আগের প্রশ্ন থেকে রিপিট হয়। তাই আগের প্রশ্ন ভালো করে দেখে কনফিউশান দূর করে নিন। আমি এখানে সিলেবাসের কিছু জিনিস কোথায় আছে বলছি। সময় পেলে দেখবেন, না পেলে নাই –

=> পদার্থের অবস্থা, এটমের গঠন, কার্বনের বহুমুখী ব্যবহার, এসিড, ক্ষার, লবণ, পদার্থের ক্ষয়, সাবানের কাজ, মৌলিক কণা, ধাতব পদার্থ এবং তাঁদের যৌগসমূহ, অধাতব পদার্থ, জারণ-বিজারণ, তড়িৎ কোষ, অজৈব যৌগ, জৈব যৌগ- এ অংশটা রসায়ন বিজ্ঞানের। পদার্থের অবস্থা – কঠিন, তরল, বায়বীয় (১ম চাপ্টার, রসায়ন-নবম শ্রেণী)। এটমের গঠন, মৌলিক কণা- ইলেকট্রন, প্রোটোন, নিউট্রন, আইসোটোপ, আইসোটোন, আইসোবার (৫ম চাপ্টার, রসায়ন-নবম শ্রেণী)। এসিড, ক্ষার, লবণ, সাবান – নবম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান, অষ্টম শ্রেণীর বিজ্ঞান বই। বাকিগুলো রসারন বইয়ের শেষের চাপ্টারগুলোতে আছে।

=> ভৌত রাশি এবং এর পরিমাপ, ভৌত বিজ্ঞানের উন্নয়ন, চৌম্বকত্ব, তরঙ্গ এবং শব্দ, তাপ ও তাপগতিবিদ্যা, আলোর প্রকৃতি, স্থির ও চল তড়িৎ, ইলেকট্রনিক্স, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান, শক্তির উৎস ও এর প্রয়োগ, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস, পারমাণবিক শক্তি, খনিজ উৎস, শক্তির রূপান্তর, আলোক যন্ত্রপাতি, তড়িৎ চৌম্বক, ট্রান্সফর্মার, এক্সরে, তেজস্ক্রিয়তা- এ অংশটা পদার্থবিজ্ঞানের। নবম শ্রেণীর পদার্থ বিজ্ঞান বইতে এগুলো আছে।

=> পদার্থের জীববিজ্ঞান বিষয়ক ধর্ম, টিস্যু, জেনেটিক্স, জীববৈচিত্র, এনিম্যাল ডাইভারসিটি, প্লান্ট ডাইভারসিটি, এনিম্যাল টিস্যু, অর্গান ও অর্গান সিস্টেম, সালোক সংশ্লেষণ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, জুলোজিক্যাল নমেনক্লেচার, প্রাণিজগত, উদ্ভিদ, ফুল, ফল, রক্ত অ রক্ত সঞ্চালন, রক্তচাপ, হৃদপিণ্ড, মাইক্রোবায়োলজি, প্লান্ট নিউট্রেশন, পরাগায়ন- এগুলো নবম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান বইতে এগুলো আছে।
=> বাকি অংশ – গাইড থেকেই সুবিধা হবে।

কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (১৫ নম্বর): বাজারের যে কোন গাইড। সিলেবাসে অনেক কিছু ডিটেইলসভাবে উল্লেখ আছে। এত কিছু দেখে ভয় পাবার কিছু নেই। সবকিছুর এলিমেন্টারি লেভের জিনিসই আসবে। গভীরের কিছু নয়। কম্পিউটারের সিলেবাসটা অনেক broad, তেমন deep না। বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আইটির যেসব প্রশ্ন আসে, সেগুলো পড়ে ফেলুন। আর এর বাইরে সময় পেলে বেশির ভাগ চাপ্টারই নবম শ্রেণীর কম্পিউটার বইতে আছে। ইন্টারনেটেও কিছু পিডিএফ ফাইল আছে।

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন (১০ নম্বর): আগের প্রশ্ন দেখুন। কমনসেন্সের উপর থেকেই বেশি প্রশ্ন হয়। সিলেবাসে পয়েন্ট করা হয়েছে যে – সুশাসন থাকলে সমাজে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বজায় থাকবে। আবার মূল্যবোধের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এজন্য নৈতিকতাকে শিক্ষার কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করলে সেটা সুদূর ভবিষ্যতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে।

যে কথা বলে শুরু করেছিলাম – সব কিছু নিয়ে একবারে বড় লেখা দিলাম। তাই মনে হতেই পারে – এ তো সাগর, কবে শেষ হবে, সম্ভব নাকি? আসলে কিন্তু তা নয়। আমি বিষয়ভিত্তিক ছোট ছোট লেখা দিতে পারতাম, আবার শুধু বইয়ের নাম, টপিকের নাম দিয়ে শেষ করতে পারতাম। কিন্তু সেটা আপনাকে অনেকেই দিতে পারবে। তাতে আসল জিনিস বাদ পড়ত। আর এত কিছু তো আপনি একদিনে শেষ করবেন না। সবাই ধাপে ধাপে শেষ করে। তাই অনেক পড়া মনে করে পেনিক নিয়েন না। টানা কয়েকদিন পড়লেই ছোট হয়ে আসবে। সময়কে কাজে লাগালেই ব্যথা থেকেই আলো ফুটবে। এক বসায় যা মনে হল লিখলাম। পরে সময় পেলে বিষয়ভিত্তিক আমার কিছু ম্যাটেরিয়াল দেব। এই মুহূর্তে অনেকেরই ইনবক্সের বা কমেন্টের উত্তর দিতে পারছি না। রেসপন্স না করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আর প্যাচাল নয়। চলুন পড়াশুনা করি। Let’s move.
……………………
©সুজন দেবনাথ, ২০১৬