Select Page

শ্রীকৃষ্ণ – একজন কূটনীতিক। ইতিহাসের একেবারে প্রথমদিককার কূটনীতিক। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রধান মধ্যস্থতাকারী। যুদ্ধটা যেন না হয় – সেজন্য দীর্ঘ ৬ মাস দুই পক্ষের সাথে ইনটেনশিভ নেগোশিয়েশান করেছেন। কুরু-পাণ্ডবদের এক টেবিলে বসিয়ে দিনের পর দিন চেষ্টা করেছেন সমঝোতার।

কূটনীতিকের যেসব গুণের কথা আমরা স্যার হেরাল্ড নিকলসনের কাছে শুনেছি – তাঁর সবগুলিই মহাভারতের কৃষ্ণ ব্যবহার করেছেন।
শুধু রাজনীতির নয় – প্রেমের দূতও তিনি। নিজে অনেকগুলো ডিপ্লোম্যাটিক বিয়ে করেছেন। বোন সুভদ্রা যেন মহাভারতের সবচেয়ে বড় বীর অর্জুনের সাথেই প্রেম করে – সেটা নিশ্চিত করেছেন। আবার সেই বিয়ে নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হলে – অর্জুনের সাথে সুভদ্রার পালিয়ে যাবার ব্যবস্থাটাও করেছেন।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে অর্জুন যুদ্ধ করতে না চাইলে, শ্রীকৃষ্ণ মাত্র কিছু সময় ধরে অর্জুনকে যেসব উপদেশ দিয়েছেন, সেটাই হয়ে গেছে পৃথিবীর সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক গ্রন্থ ‘গীতা’। অতি অল্প সময়ে বলা শ্রীকৃষ্ণের এই দর্শন থেকেই পরবর্তী সময়ে অনেক মহামানব নতুন নতুন দর্শন সৃষ্টি করেছেন।

কৌরব সভায় দ্রৌপদীর মান বাঁচিয়েছেন। ধর্মের ধ্বজাধারী দ্রৌপদীর স্বামীরা যখন মাথা নিচু করে দ্রৌপদীর অপমান দেখছিলেন – তখন শ্রীকৃষ্ণই দেখিয়েছিলেন শাস্ত্র নয়, প্রথা নয়, রাজবিধি নয় – বিবেকই ধর্ম।
আজ তাঁর জন্মদিন। Happy Birth Day, Shree Kirshna.
.
ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে জন্মাষ্টমীতে কয়েকটা গান বাজত। সবগুলোই কাজী নজরুল ইসলামের। জন্মদিনে নজরুলের গানে শ্রীকৃষ্ণের দর্শনকে স্মরণ করছি –

‘হে পার্থসারথী! – বাজাও বাজাও পাঞ্চজন্য শঙ্খ’
অথবা
‘এলো নন্দের নন্দন নব-ঘনশ্যাম – এলো যশোদা নয়নমণি নয়নাভিরাম’

© সুজন দেবনাথ