Select Page

সেদিন হঠাৎ করেই অনেক ধনী হতে ইচ্ছে করলো। অনেক অনেক ধনী। মনে হলো – এক্ষুণি আমার রাশি রাশি টাকা দরকার। একটা দ্বীপ কিনতে হবে। পুরো একটা দ্বীপ।


দ্বীপটা দেখেই মনে হয়েছিলো – আহা, এমন একটা দ্বীপ যদি আমার থাকতো! এমন নীলের মত নীল। এমন সবুজের মত সবুজ। কেমন ভালো মানুষের মত সাগরের বুকে শুয়ে শুয়ে আকাশকে চোখ মারছে। কিনতে পারলে দ্বীপটিকে পৃথিবীর সকল সত্যিকার প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য খুলে দিতাম। তারা এখানে এসে বিনা শুল্কে নীল-সবুজ প্রেম করতো।

সুনীল গাঙ্গুলী লিখেছিলেন, ‘অনেকদিন থেকেই আমার একটা পাহাড় কেনার শখ। কিন্তু পাহাড় কে বিক্রি করে তা জানি না। যদি তার দেখা পেতাম, দামের জন্য আটকাতো না।’


আমার কিন্তু দামের জন্যই দ্বীপটি কেনা আটকে যাচ্ছে। দ্বীপটি গ্রিসে। নাম কর্ফু। শুনলাম গ্রীসের অর্থনৈতিক সংকটের জন্য এই দ্বীপের অনেকেই সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছে। অনেক টাকা থাকলে, আমি পুরো দ্বীপটা কিনে ফেলতাম।

এখানে সাগর আর পাহাড় দিন-রাত সুরের খেলা খেলছে। সব সময় একটা মায়াভরা শব্দ। সেই শব্দ মানুষের মনে সৃষ্টি করেছে গান। এখানে প্রায় সবাই গান করে। গ্রীসের সংগীতের রাজধানী এই কর্ফু। এদেশের নামী দামী অনেক শিল্পীই এসেছে এই দ্বীপ থেকে।

তবে অনেক সুন্দর হলে আবার অন্য রকম বিপদ আছে। অনেকেরই নজর পরে। সুন্দরী কর্ফু দ্বীপকে তাই যে যখন পেরেছে দখল করেছে। ইতালী, জার্মানি, ব্রিটিশ, অটোমান তুর্কি সবার হাতেই কোন না কোন সময় ছিলো। তাই দ্বীপের সাগর পারের পাহাড়ের মত এর ইতিহাসও উঁচু-নিচু। সেজন্য রীতিনীতি, প্রথা সবই মাল্টিকালচার। হঠাৎ গিয়েও মিশে যাওয়া যায়। ইতালীয়ানরা এখানে দিয়ে গেছে সঙ্গীত, জার্মানরা চিত্রকলা আর ব্রিটিশরা দিয়ে গেছে ক্রিকেট। গ্রীসের একমাত্র এই দ্বীপেই ক্রিকেট খেলা হয়। দ্বীপটা কিনতে পারলে আর কিছু না হোক, ক্রিকেট খেলেও দিন কাটানো যেত!!!

১৯ মে ২০১৭, কর্ফু, গ্রিস © সুজন দেবনাথ