দুপুরের ভাতঘুমটা মাত্র উঁকি দিয়েছে, এখনো সুর তৈরি করা শুরু করেনি নাক।
হঠাৎ পাশের বাড়ির চিৎকার – ‘বাঁচাও, বাঁচাও, জহর ভাই, আমার সব কিছু নিয়ে গেল, মেরে ফেলল রে’!
ধরফর করে উঠে বসল জহর, প্রতিবেশী বন্ধুর বিপদ, সে কী ঘুমিয়ে থাকতে পারে! কিন্তু এত বিকট চিৎকার! নিশ্চয়ই ভয়ংকর কিছু। ঝাঁপ দেবার আগে একটু ভাবা দরকার। সে দাঁড়াল, একটা লাঠি নিল, কিন্তু ঘর থেকে বের হল না। চিৎকারটা আরো বেড়েছে। সে বের হবে হবে করছে। বউ বলল, ‘না, কিছুতেই না, এ অবস্থায় বের হওয়া যাবে না।’
চিৎকারটা একটু কমে এসেছে। এবার সে ঘরের বাইরে এসে দাঁড়াল। ভাল করে বোঝার চেষ্টা করল – বিপদটা কতটুকু ভয়ানক।
এখন চিৎকারটা একেবারে থেমে গেছে। এবার সে দুএক পা করে আগাচ্ছে।
‘ধর, ধর, চলে গেল’- আবার জোরে চিৎকার ভেসে আসছে ঐ বাড়ি থেকে।
শুনতেই সে হুংকার দিয়ে ওই বাড়িতে পৌছে চিৎকার দিল, ‘কই,কই- ধর ধর’।
তার মতই আরো দু-একজনও এসে গলা মিলাল। ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে।
একটু দেরী করলেই যদি ঝড়টা নিজের উপর না আসে, তাহলে বুদ্ধিমান মানুষরা একটু দেরী তো করবেই।
ওসি সাহেবও খুবই বুদ্ধিমান। ঋষিপাড়ার ষোল বছরের মেয়েটিকে তুলে নিতে যেদিন ট্যারা মতি দলবল নিয়ে এল, ওনাকে ফোন দেয়ায় পুলিশ এসেছিল – তবে বুদ্ধিমানের মতই একটু সময় নিয়ে।
বুদ্ধিমান // সুজন দেবনাথ