Select Page

BCS viva is not test cricket, it is T20 – Confidence is the only key.

প্রথমে বিসিএস ভাইভা নিয়ে কয়েকটা খামাকা উপদেশ দেই। তারপর আমার ভাইভারস্মৃতির ঝাঁপি খুলতে চেষ্টা করব।

১। কোন সন্দেহ নাই যে – Any viva is a game – সেখানে নিজেকে পণ্ডিত প্রমাণ করা নয়, ‘কনভিন্স করে’ই জিততে হয়। কোন বসই পণ্ডিত চায় না, একজন competent & loyal লোক চায়। আপনি নিজেও যদি ভাইভা নেন, তখন নিজেকে মনে হবে জ্ঞানবৃক্ষ আর পরীক্ষাত্রীদের মনে হবে অবোধশিশু, চারাগাছ। তাই পরীক্ষক কখনোই এক্সপেক্ট করেন না যে, পরীক্ষার্থী তাকে হাইকোর্ট দেখাবে। তাই কোনমতেই argue করা বা তর্ক করা যাবে না।

Interviewer যদি ভুলও বলে, তবে ভুলটা মেনে নিয়ে বিনয়ের সাথে নিজের যুক্তিটুকু যোগ করা যায়, কিছুতেইতর্ক নয়। It’s a market, you have to sell yourself.

২। কয়েকটা কমন প্রশ্ন – যেমন, কেন বিসিএস দিচ্ছ? ফার্স্ট চয়েস এটা কেন? তোমার সাবজেক্টের সাথে এটা কিভাবে রিলেটেড? জন্ম কোন জেলায়, সেটার একটু বিবরণ – এরকম কিছু জিনিস নিজে তৈরি করে লিখে ফেলুন। এই জেনারেল প্রশ্নগুলোর উত্তর গতানুগতিক না দিয়ে একটু আলাদা করে বলা যায় কিনা ভাবুন। নিজের উত্তরের সাথে একটু ইউনিক কিছু যোগ করা যায় কিনা দেখুন – ফার্স্ট ইপ্রেশনের জন্য কাজে দেবে।

৩। ফার্স্ট আর সেকেন্ড চয়েসের জেনারেল বিষয়গুলি যে কোন বই বাইন্টারনেট থেকে দেখে ফেলুন। তবে এর জন্য ঘুম হারাম করার কোন দরকার নাই। বিসিএস ভাইভার জন্য এগুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয় না, তবে এগুলো না পড়লে কনফিডেন্স ঠিক সময়ে কাছে আসবে না। তাই এগুলো দেখতে হয়। মুখস্ত টাইপ না করে গল্প টাইপ করে নিতে পারলে বা কারো কাছে বলতে পারলে ভাল হয়।

৪। ফেইসটা স্মাইলিং রাখা, সবার সাথে আই-কন্টাক বজায় রাখা, কোন সদস্যকে ব্যাকে না রাখা, নিজের জন্য কমফোর্টেবল পোশাক পরা, ভাইভার দিনের খবরের কাগজটা দেখে যাওয়া, বাংলা তারিখ দেখে যাওয়া, ঐ দিন কোন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোন দিবস বা বিশেষ ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা জেনে নেয়া, নিজের নামের সাথে মিল আছে এমন কোন বিখ্যাত ব্যক্তি থাকলে তাঁর কথা জেনে নেয়া, নিজের জন্মদিন কোন বিশেষ দিন হলে সেটার ডিটেইলস জানা ইত্যাদি কিছু কমন কথা একটু মনে রাখতে হবে। এগুলো বলার জন্য বললাম।এগুলোআপনি আমার থেকে ভাল জানেন। ঐ সময় ফেইসবুকে সিনিয়রদের কাছে পরামর্শ নেবার মত স্মার্ট আমি ছিলাম না, তাই আপনি এমনিতেই আমার থেকে এগিয়ে।

৫। ভাইভাতে ২/১ টা প্রশ্ন ইংরেজিতে করতেই পারে, আর যাদের ফরেন ফার্স্ট চয়েস, তাঁদের বেশিরভাগ প্রশ্নই ইংরেজীতে করতে পারে। বিদেশী ভাষায় সবারই সমস্যা থাকে। তাই সমস্যা নিয়া ভাবার দরকার নেই, ভাবুন এটা সবারই জন্যই কম-বেশী একই। কিছু প্রাকটিস করতে পারেন। কমন প্রশ্নগুলার ইংরেজী উত্তর প্রেমিক/প্রেমিকা/বন্ধুর কাছে বলতে পারেন। আফসোস, আমার প্রেমিকা (বর্তমান সহধর্মিনী) সেই সময় কাছে আসলে, তাঁর সাথে কালিদাসও আসত ‘মেঘদূত’ হাতে নিয়ে – তাই পরীক্ষার আলাপ পাত্তাই পেত না। আপনার তো সে সমস্যা নেই, তো তাঁদেরকে এই কাজেও একটু লাগান।
এখন আমার নিজের ভাইভার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো দেখি।

আমার বিসিএস ভাইভা আক্ষরিকভবেই জঘন্য হয়েছে। এইটা হচ্ছে আজ পর্যন্ত ভাইভাতে আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ পারফরমেন্স। অনেক কিছুর উত্তর করতে পারি নাই। তবে ওই যে বললাম, ‘কনভিন্স করা’ – ঐটা মনে হয় কিঞ্চিৎ পেরেছিলাম।

বিসিএস প্রিলি আর রিটেন নিয়া আমার তেমন কনফিডেন্স ছিল না, কিন্তু ভাইভা নিয়া ছিল ব্যাপক কনফিডেন্স। দুই ক্ষেত্রেই ফল হয়েছে উল্টা। আমি টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে গ্রাজুয়েশান করছি – কম্পিউটার এঞ্জিনিয়েরিং।আর বিসিএস পরীক্ষার সময় আইবিএতে মার্কেটিং-এ এমবিএ পড়তাম। এদুটোর কোনটিই বিসিএসের প্রিলি বা রিটেনের সাথে ঠিক যায় না। তাই কনফিডেন্ট ছিলাম না। তবে ভাইভা নিয়ে আমি নিজেকে হরিপদ কেরানী নয়, আকবর বাদশাই ভাবতাম।

বিসিএস ভাইভার আগে অনেক ভাইভা দিয়েছিলাম – আইবিএ এডমিশন ভাইভা, বাংলাদেশ ব্যাংক, কিছুমাল্টিন্যাশনাল কোম্পানী, দেশে-বিদেশের আইটি ফার্ম, IELTS … এসব ভাইভাতে বেশ ভালই করেছিলাম।তাই তখন নিজেকে মনে হত ভাইভার দিকপাল, ভাবটা এমন যে – বিসিএস ভাইভা তুড়ি দিয়া উড়াইয়া দিমু! সেজন্যই হয়তো জীবনের সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেখানেই।

শুরুটা এমন- সালাম দিয়ে দাড়ালাম, বসতে বললে বসলাম। মাত্র তিনজন লোক বোর্ডে।

বোর্ডের চেয়ারম্যান আমার ডকুমেন্টস দেখতে দেখতে বললেন, এখন কি কর?(উনি আমাকে তুমি করেই প্রশ্ন করেছেন, আর আমার মনে হয় সেটাই আমার ভাল লেগেছিল)।

আমি জবাব দিলাম, স্যার আইবিএ-তে এমবিএ পড়ছি।

  • আইবিএর ফার্স্ট ডিরেক্টরের নাম বল।

এই রকম কিছু দিয়ে যে শুরু হতে পারে, সেটা মাথায়ই ছিল না, তাই ধাক্কাটা বেশ লাগল। টের পেলাম বিপদ আসছে, এটা মাত্র‘কলির সন্ধ্যা’। যেখনে পড়ছি, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরের নাম যে মনে রাখার মত জিনিস, সেটা এই প্রথম মাথায় এল। যাই হোক আমতা আমতা করে বললাম, জানি না স্যার।

  • জান না? খুবই ভালো কথা। এটা কিভাবে জানতে পারতে?
  • স্যার, বর্তমান ডিরেক্টরের রুমে প্রাক্তন ডিরেক্টরদের নামের একটা বোর্ড টানানো আছে, সেটা খেয়াল করলেই হত।
  • খেয়াল করা কি উচিত ছিল না?
  • জ্বি স্যার, ছিল।
  • এসব বিষয় মনে রাখা কি চাকরীর জন্য গুরুত্বপূর্ন?
  • অবশ্যই স্যার, আমি যেখানে আছি সেই অফিস আর অন্য যেসব অফিসের সাথে কাজ করছি, সেগুলোর অফিস প্রধানসহ কাউন্টারপার্টদের সম্বন্ধে জানলে কাজের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।

দেখলাম, ডিরেক্টরের নাম বলতে না পারায়, ওনার ভুরু যে কুঁচকে গিয়েছিল, সেটা কিঞ্চিৎ সোজা হল। এরপরের প্রশ্নঃ

  • ফরেন সার্ভিস ফার্স্ট চয়েস? কেন করতে চাও ফরেন সার্ভিস?

(এইবার মনে হইল, কমন পড়ছে, গাইড বই ভাজা ভাজা করে তো এসবই পড়েছি!)

  • বলতে লাগলা, একজন কূটনীতিক দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে, দেশের স্বার্থ রক্ষা করে, ডিপ্লোমেটিক লাইফ … ব্লা ব্লা।
    এর ব্লা ব্লার মাঝে কখন যেন সারা পৃথিবীতে ডিপ্লোমেটদের dignity অনেক বেশি – এমন একটা বলে ফেললাম। তখন কি আর জানতাম যে, একথাটায়ই কোথায় যেন আগুনে ঘি পড়ে গেছে। এবার চেয়ারম্যান নয়, পাশের আরেক ভদ্রলোক বেশ অক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে বলে ওঠল,
  • ডিপ্লোমেটদের dignity অনেক বেশি কিভাবে?

আমি তো বুঝতেই পারছি না, উনি কি বলতে চাইছিলেন।সারা জীবন শুনে এসেছি ডিপ্লোমেটরা অনেক ভাল, তাদের অনেক সম্মান। তো উনি কী বলতে চাচ্ছেন। উনি যোগ করলেন,

  • ডিপ্লোমেটরা তো বিদেশে দ্বিতীয় সারির নাগরিকের মত থাকে, তাঁদের dignity বেশি হল কিভাবে?

আমার তো মাথাই কাজ করছিল না – দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক? সারা জীবন কি শুনলাম, কি পড়লাম, কি দেখলাম তাইলে? সেসময়তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী, আমেরিকার হ্যারি কে টমাসদের প্রতিদিন টিভিতে বা পত্রিকায় দেখে বুঝেছিলাম – ডিপ্লোমেটগণ বিরাট কিছু। সেই ধারনা ভুল? এই কথাগুলো মুখে এসে যাচ্ছিল, কপাল ভাল যে বের হয় নাই। একটু ভাবার চেষ্টা করলাম, উনি কেন এটা বলছেন। উনি নিশ্চয়ই সরকারের একজন বড় কর্মকর্তা, নিজেকে ভীষণ সফল ভাবছেন, এখন অন্য কেউ dignity তে ওনার চেয়ে বড়, এটা শুনতে উনি চাইছেন না, সত্য হলেও অন্তত একজন চাকরীপ্রার্থীর কাছে এমন কথা শুনতে ওনার ভাল লাগছে না। কিন্তু কথাটা তো আমি বলে ফেলেছি, এখন তো আর বলতেও পারি না যে, ভুল বলেছি। আবার উনি আর আমি দুজনেই জানি যে, আমি ভুল বলি নি। একটা ফাঁপর নিতে হবে বাঁচতে চাইলে। হঠাৎ বলে ফেললাম,

  • স্যার, আসলে ক্যাডার চয়েস দেবার সময় আমি আমার এক পরিচিত রিটায়ার্ড জয়েন সেক্রেটারির (নাম উল্লেখ করে) পরামর্শ নিয়েছিলাম। উনি বলেছেন যে, পৃথিবীতে ডিপ্লোমেটদের আলাদা সম্মান আছে, সেজন্যেই দিয়েছি।

দেখলাম, উনি চুপ হয়ে গেলেন, কিছু বললেন না। আমি এই জায়গাটাকে আমার ভাইভার টার্নিং পয়েন্ট বলে মনে করি। তর্ক না করে, আমি ক্যাডার চয়েসে ওনার একজন সিনিয়র সহকর্মীর (রিটায়ার্ড জয়েন সেক্রেটারি) রেফারেন্স দিয়েছি। সাথে আমার ভয়েস এই পয়েন্টে submissive ধরনেরই ছিল। ওনার আর argue করার জায়গা ছিল না। এই অভিজ্ঞতা আমাকে বলে যে, যে কোন প্রশ্নে ঐ বিষয়ের মোটামুটি হোমড়াচোমড়া কারো রেফারেন্স উল্লেখ করে কিছু বললে সেটা বিশ্বাসযোগ্য হয়ে যায়। যেমন, অমুক ডিসি স্যার আমার পরিচিত, উনি আমাকে এডমিন ফার্স্ট চয়েস দিতে উৎসাহিত করেছে, আর আমারও নিজেরও এটাই ভাল লাগে… ব্লা ব্লা। তবে আন্দাজে কারও নাম বলা যাবে না, এটা বুমেরাং হতে পারে।

এরপর বোর্ডের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের ফরেন রিলেশান নিয়ে বেশ কয়েকটা প্রশ্ন করলেন, সেগুলো মোটামুটি উত্তর করলাম। এই জায়গায় যেটা হল – উনি আমার উত্তর থেকেই পরের প্রশ্ন করে গেলেন। যেমন, ভারতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের নাম কি? আমার উত্তরের মধ্যে হাইকমিশনার শব্দটা এল। উনি বললেন, হাইকমিশনার আর এম্বাসেডরের পার্থক্য কি? উত্তরের মাঝে কমলওয়েলথ শব্দটা এল। পরের প্রশ্ন – কোন দেশ ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল, কিন্তু কমনওয়েলথে নেই। উত্তরের মাঝে মিয়ানমার শব্দটা এল। পরের প্রশ্ন – মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের ৪টা ডিপ্লোমেটিক চ্যালেঞ্জ কি কি?

উপরের প্রশ্নের সিরিজটা একটু লক্ষ্য করুন – আমার উত্তরের শব্দ থেকে পরের প্রশ্ন করেছে।

এটা ভাইভার জন্য খুব কার্যকর টেকনিক। উত্তরে এমন শব্দ বলতে হবে যেগুলোর ডিটেইলস আপনি জানেন। যাতে পরের প্রশ্নে সেটা আসলে থেমে যেতে না হয়।

যেমন ধরুন, আপনি জি-২০ এর বিস্তারিত জানেন না কিন্তু সার্কের বিস্তারিত জানেন। এখন আপনাকে প্রশ্ন করল, বর্তমান পৃথিবীতে আমেরিকার ক্ষমতা কতদিন থাকবে? এটার উত্তরে অনেক পয়েন্টের সাথে – জি-২০ এর গুরুত্ব বাড়ছে, আমেরিকা একা পারছে না-এটা সহজেই বলা যায়। কিন্তু যেহেতু আপনি জি-২০ এর বিস্তারিত জানেন না, আপনি এটা বলবেন না। আপনি সার্ক এর কথা জানেন। ভাবুন কিভাবে সার্ক শব্দটাকে আনা যায়, যাতে পরের প্রশ্ন সার্ক নিয়ে হতে পারে।

আপনি বলুন আমেরিকার গুরুত্ব কমছে আর আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর গুরুত্ব বাড়ছে, আমাদের এ অঞ্চলে সার্কের গুরুত্ব বাড়ছে। এতে পরের প্রশ্ন সার্ক নিয়ে হতে পারে। আর আপনি তো সেটাই চান।

অর্থাৎ যেটি বলতে চাচ্ছি, সেটি হলো – ভাইভাকে নিজের expertise এর দিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করা। এই বিষয়টির কন্ট্রোল সব সময় আপনার হাতে থাকবে সেটা নিশ্চিত নয়। তবে চেষ্টা করে কিছু লাভ হবেই।

আমার ভাইভা কিন্তু এখনো শেষ হয় নি। চলেন, সেখানে আবার যাই।

আমার সেকেন্ড চয়েস ছিল কাস্টসম। সেই ডানপাশের ভদ্রলোক এবার কাস্টমস নিয়ে একটানা ৭/৮ টা প্রশ্ন করলেন।প্রতি প্রশ্নেই কাস্টমসের একটা টেকনিক্যাল টার্মিনোলজি উল্লেখ করে বললেন, এটার মানে কি? আমি ওগুলার নামই কোনদিন শুনিনি। একটাও পারলাম না। উনি দ্রুত একের পর এক প্রশ্নগুলো করে যাচ্ছিলেন, আর আমি জানি না বলার আগেই পরের প্রশ্নবলে যাচ্ছিলেন। মানে উনি ধরেই নিয়েছিলেন আমি এগুলোর একটাও জানব না।আসলেও তাই।

আমিজানতাম না, এখনো জানি না। সেই টার্মগুলোই জীবনে প্রথম শুনছিলাম আর মনে রাখাও সম্ভব হয় নি। তখন একটা করে প্রশ্নের উত্তর পারছিলাম না, আর আমার ভাইভা বিষয়ে আকবর বাদশাহী মন কেঁদে উঠছিল। মনে হচ্চিলো, আমার ভাইভার আশা বুঝি শেষ!

আসলে তখনও শেষ হয় নি।

এবারবোর্ডের চেয়ারম্যান এবার আমার গ্রাজুয়েশান সাবজেক্ট ‘কম্পিউটার এঞ্জিনিয়ারিং’ নিয়ে কিছু প্রশ্ন করলেন। সেগুলো ভালোই বলতে পারলাম। এরপর ‘কম্পিউটার সায়েন্স’ বিসিএস কি কাজে লাগবে জিজ্ঞেস করলেন।

এটাও কমন প্রশ্ন। আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল ডিপ্লোমেসি মিলিয়ে গুছিয়ে বললাম। সেই সাথে যোগ করলাম, স্যার আমি আমার ব্রেইনটাকে এখনো এতটাই নমনীয় মনে করি যে, আপনারা সঠিক ট্রেনিং দিলে, দেশের স্বার্থে যে কোন কাজের জন্য এটা উপযোগী।

প্রায় সবাই বলে উঠলেন- Well Said.
ভাইভা সমাপ্ত হল।

শুধু প্রশ্নের উত্তরের কথা ধরলে, আমার ভাইভা ভাল হ্য় নি। তবে মনে হয় বোর্ডকে কনভিন্স করতে পেরেছিলাম। ফাইনাল রেজাল্টে আমি বিসিএস পররাষ্ট্রে থার্ড হলাম। তাঁর মানে, রিটেনে যত ভালই করি না কেন, একটা মিনিমাম নম্বর আমি ভাইভাতে অবশ্যই পেয়েছি (দুঃখিত আমি মার্কশিট তুলতে পারি নি)। তাঁর মানে ভাইভাতে প্রশ্নের উত্তর করার চেয়ে কনভিন্স করাটা বেশি ইম্পরটেন্ট। আমার মনে হয় ভাইভাতে আমিধাক্কাগুলো সামলাতে পেরেছিলাম।

আর এই ধাক্কা সামলাতেই আপনাকে কনফিডেন্ট হতে হবে। ফর গড সেক, আমি যেভাবে আমার কথাগুলো বললাম, সেভাবে আমাকে কেউ বলে নি। আমি বিসিএসের জন্য কোন কোচিং করি নি।২/৩ টা কোচিং আমার নাম তাঁদের লিফলেটে ছাপিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু তা ডাহা মিথ্যা, এই মিথ্যার জন্য অনেকে মাপ চেয়েছে, কিন্তু লিফলেটে নাম দেয়া বন্ধ করে নি।

যাই হোক, তাঁর মানে, আপনার প্রিপারেশান আমার থেকে ভাল। তো আপনি আজই আর হরিপদ কেরানী নয়, আকবর বাদশা হয়ে যান। একজন বিনয়ী বাদশা, জয় করুন বোর্ডকে। শুভকামনা।

BCS viva is not test cricket, it is T20 – Confidence is the only key.

লেখক: সুজন দেবনাথ
২৮ তম বিসিএস (পররাষ্ট্র ৩য়)