যে কোন জব পরীক্ষার দুইটা মাত্র রেফারেন্স নিয়ে শুরু করুনঃ
(১) আগের কয়েক বছরের প্রশ্ন
(২) যদি সিলেবাস থাকে, যেমন বিসিএসের একটা সিলেবাস আছে।
সবার আগে এই দুটি জিনিস নিজে নিজে ভালো করে দেখতে হবে। এনালাইসিস করতে হবে – আমি কোন কোন টপিক ভালো পারি আর কোনগুলোতে সমস্যা আছে। যে যে টপিকে সমস্যা আছে, সেগুলো নিয়েই আগে পড়াশুনা করতে হবে। এই কাজটা আপনাকেই করতে হবে। এখুনি আগের প্রশ্ন আর সিলেবাস দিয়ে শুরু করুন। একটা নোট বুক নিন। সাবজেক্ট (ম্যাথ, ইংরেজি, বাংলা, সাধারণ জ্ঞান) ধরে ধরে লিখে ফেলুন – ঐ সাবজেক্টে আপনার কোন কোন টপিকে সমস্যা আছে।
যেসব টপিকে সমস্যা আছে, সেগুলো নিজে নিজে সলভ করার চেষ্টা করুন। বাজারের যেসব বইয়ে সমাধান আছে, সেগুলো দেখে সমাধান করার চেষ্টা করুন। শুরুতে সবাই ধরে নেয়, আগের ১০ বছর যেরক প্রশ্ন হয়েছে, সাধারণত ওরকমই হবে। তবে হুবহু হবে না। ঐ একই রকম অন্য আরেকটা প্রশ্ন আসলে যেনো উত্তর করা যায়, সেভাবে প্রিপারেশান নিতে হবে। ম্যাথের জন্য একই নিয়মে একটি ম্যাথের সংখ্যা পাল্টে বা একটু এদিক-সেদিক করে আরেকটা প্রশ্ন হলে, সেটা পারতে হবে। ইংরেজী বা বাংলা গ্রামারের জন্য নিয়মটা বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। একই নিয়মের আরেকটা প্রশ্ন হলে, যাতে ধরতে পারা যায়, সঠিক উত্তর করা যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। এটাই বেসিক প্রিপারেশান।
বইয়ের সমাধান দেখে কোন একটা টপিকের/প্রশ্নের নিয়ম যদি নিজে বুঝে যান, তাহলেই প্রিপারেশান হয়ে গেলো। সমাধান দেখে যদি নিজে বুঝতে না পারেন, তাহলে কারো সাহায্য নিতে হবে। ধরুণ, আপনার সমস্যা ম্যাথে। তাহলে ম্যাথের একজন টিচার খুঁজুন, বা ম্যাথ ভালো পারে এমন কোন বন্ধুর সাহায্য নিন। সমস্য যদি ইংরেজিতে থাকে, তাহলে ইংরেজির শিক্ষক বা বন্ধুর সাহায্য নিন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি আপনার সমস্যাগুলোর সমাধান করবেন। টিচার বা সাহায্যকারী সব সময় সে নিজে যা জানে, সেটাই দেখাতে চায়। তাতে আপনার কাজ হবে না। আপনার দরকার হলো – আপনার যেখানে সমস্যা, সেগুলোর সমাধানের উপায় বুঝে নেয়া। সেজন্য নিজে আগে প্রশ্ন এনালাইসিস করে, যেখানে সমস্যা আছে, সেগুলো নিয়ে বসতে হবে। আগে নিজে কষ্ট করে, সমস্যা চিহ্নিত করে, তারপর কারো সাহায্য নিন। সেটা না করে, আগেই কোচিং বা কারো সাহায্যের জন্য ছুটাছুটি করলে, আপনার প্রিপারেশান হবে না। খামাখাই সময় নষ্ট হবে।
তাই প্রথমেই লোকের পেছনে না ছুটে, আগে নিজে প্রশ্ন আনালাইসিস করুন। আপনার দুর্বলতা কোথায় আছে, সেটা চিহ্নিত করে সেগুলোর জন্য নিজেই সমাধানের চেষ্টা করুন। এতেই আপনার প্রিপারেশান ৭০% হয়ে যাবে। বাকি থাকলো, কোথায় আপনার সমস্যা আছে। সেই সমস্যা নিয়ে কারো হেল্প নিন।
ম্যাথ, ইংরেজি ও বাংলা গ্রামারের জন্য যদি বাচ্চাদের বই দেখা লাগে, সেটাই দেখতে হবে। স্কুল লেভেলের বই দিয়ে শুরু করা যায়, অনেকেই সেটাই করেন। কিন্তু মনে রাখুন, স্কুলের বই আপনাকে শুধু বেসিক শিখাবে, চাকরির পুরোপুরি প্রিপারেশান কিন্তু সেটা দিয়ে হবে না। আপনি যেসব জব পরীক্ষা দিচ্ছেন, সেগুলোর আগের প্রশ্নই আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স।
সাধারণ জ্ঞানের জন্য যে কোন বই হলেই হবে। কিন্তু বিষয় একটাই – সাধারণ জ্ঞানেরও টপিক দেখুন, কোন টপিক থেকে কি এসেছে, ঐ রকম একটা আসলে যেনো পারা যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ জ্ঞান মনে রাখার জন্য বিভিন্ন টেকনিক, ছন্দ এসব অনেক সময় কাজে দেয়, কনফিউশন দূর করে।
যে কোন চাকরির পরীক্ষার আগে অবশ্যই নিজে নিজে মডেল টেস্টের মত প্রশ্ন সলভ করুন। এটা সময় ধরে করুন। মডেল টেস্টের বই বা কারেন্ট এফেয়ার্সের শেষ দিকে সাম্প্রতিক চাকরি পরীক্ষার মডেল টেস্ট থাকে। সাম্প্রতিক সময়ের জব পরীক্ষার প্রশ্ন যেখানে পাবেন, সেটাই সলভ করুন।
শেষ কথা, কাজটা আপনাকেই করতে হবে, অন্য কেউ আপনার হয়ে করতে পারবে না। তাই আগে নিজে প্রিপারেশান নিন, তারপর সমস্যা নিয়ে অন্যের সাহায্য নিন। এটাই প্রিপারেশানের স্মার্টেস্ট উপায়। আমি জানি, আপনি স্মার্ট, তাই নিজের কাজটা নিজেই আগে করুন। আপনার জন্য একটা স্মার্ট সময় অপেক্ষা করছে।
© সুজন দেবনাথ