Select Page

এথেন্সে খ্রিস্টমাসের আগে শিশুদের সাহায্যের জন্য একটা মেলা বসে। মেলার নাম ‘খ্রিস্টমাস বাজার’। বাজারে সারা পৃথিবীর সাদা, কালো, বাদামী সব রঙের মানুষ মিলেমিশে একাকার। একেবারে সত্যিকার একটা রংধনু পরিবেশ। সেই রংধনুর সবচেয়ে উজ্জ্বল রঙ কালো। আলাদা করে চোখে পড়ে কালো আফ্রিকানদের। এখানেও ওরা সব সময় হাসছে। হাসতে হাসতে জড়িয়ে ধরছে। ওদের স্টলে বাজনা বাজছে। কয়েকজন মিলে মুখোস পরে নাচছে। একেবারে মন ভাল করে দেয়া ‘হাসি-মাখা সংস্কৃতি’।

এই মেলায় আমি যতক্ষণ ছিলাম, আফ্রিকানদের স্টলগুলোতেই ঘুর ঘুর করেছি। ইথিওপিয়ার একটা মেয়ে তাঁদের দেশের চা-কফির দোকান সাজিয়ে ফ্লোরের উপর বসে গেছে। সারা মেলায় এই মেয়েটাকেই আমার সবচেয়ে সুন্দর মনে হলো। কালো ভ্রমর মনে হয় একেই বলে। পাশে আর একটি মেয়ে অহংকারী মুখে দেখাচ্ছে ইথিওপিয়ার বর্ণমালা আমহারিক। কাঠের উপর বসানো হাতীর দাঁতের তৈরি আমহারিক বর্ণগুলো চকচক করছে। সেই সাথে হাসির ঝলকে চকচক করছে মেয়েটির দাঁত। ঘানার ফুর্তিবাজ ছেলেটা সারাক্ষণ বাজাচ্ছে ওদের দেশীয় বাদ্য কাসা। মিষ্টি ঝুন ঝুন শব্দে আনন্দ ভেসে ভেসে যাচ্ছে। এই আফ্রিকান স্টলগুলো যে কোন ইউরোপীয়ান স্টলের চেয়ে অনেক অনেক বেশি উপভোগ্য। বেঁচে থাক এই হাসিমাখা সংস্কৃতি। ওরাই একদিন সত্যি সত্যি তৈরি করবে একটি রংধনু পৃথিবী।

©সুজন দেবনাথ, ২৬ নভেম্বর ২০১৬
……………… ………………